রিয়াজুল ইসলাম আলম,,,দেবহাটা প্রতিনিধি।।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে সনাতন ধর্মালম্বী মানুষদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে গেছে। প্রতিমা তৈরির শেষ সময়ে এখন রং তুলিতে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা। ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিমা তৈরি ও মন্দিরগুলোর সার্বিক ব্যবস্থা বুধবার সকালে পরিদর্শন করেছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলন সাহা ও দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া হাসান। এসময় দেবহাটা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি আর.কে.বাপ্পা, দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর খায়রুল আলম, দেবহাটা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান কাজলসহ বিজিবির কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যেই দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার প্রতিটি মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শিল্পীদের নিপুণ হাতে ধীরে ধীরে পূর্ণতা পাচ্ছে দেবী দুর্গা ও তার সহচর-সহচরীদের প্রতিমা। অনেক জায়গায় প্রতিমা তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হলেও, এখনো বাকি রয়েছে রঙ-তুলির চূড়ান্ত পরশ। গত ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজা দিয়ে শুরু হয়ে ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মাধ্যমে শেষ হবে দেবী দুর্গার আরাধনা। আয়োজকদের বিশ্বাস, এবারও উৎসব হবে শান্তিপূর্ণ এবং মহাআনন্দের। এবছর উপজেলার ২১টি মন্দিরে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসন পৃথকভাবে মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে পূজা নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্নে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন। শিল্পীদের ব্যস্ততা এখন চরমে। খড়, কাদা আর মাটির নিপুণ কাজে প্রতিমার অবয়ব গড়ে তুলছেন তারা। এরপর রঙ তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলবেন দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, স্বরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের সৌন্দর্য।
হিন্দু শাস্ত্রিয় মতে, এবার দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে কৈলাশ থেকে আসবেন এবং দোলায় (পালকি) ফিরে যাবেন, যা শুভ এবং শান্তির প্রতীক বলে মনে করেন সনাতন ধর্মীয় অনুসারীরা। প্রতিমা শিল্পী শংকর মন্ডল জানান, প্রতি বছর দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে প্রচন্ড ব্যস্ত থাকেন তিনি। প্রতিমা বানানোর জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে তার কাছে অর্ডার আসে। নির্ধারিত সময়ে প্রতিমা তৈরি করতে দিন রাত পরিশ্রম করতে হয় তাকে। পরিশ্রম অনুযায়ী তেমন টাকা পান না বলে জানান তিনি। তবুও বাপ-দাদার পুরাতন পেশা ধরে রাখতে তিনি এই কাজ করে চলেছেন। প্রতিমা তৈরির ব্যয় বৃদ্ধি বেড়েছে, পারিশ্রমিক খুব একটা বাড়েনি বলে আক্ষেপও প্রকাশ করেন তিনি। দেবহাটা ফুটবল মাঠ মন্দির কমিটির সভাপতি দিপঙ্কর ঘোষ জানান, উৎসবের সাথে পূজা করতে চান তিনি। প্রতি বছর দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে বিভিন্ন প্রবাকান্ড রটে। কিন্তু সেসব গুজবে কান না দিয়ে আনন্দঘন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে বলে তিনি আশা করেন। বুধবার গাজীরহাট মন্দির পরিদর্শনের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলন সাহা বলেন, উপজেলার ২১টি মন্দিরে দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্নে সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ ও সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দুপুরে দেবহাটা ফুটবল মাঠ ও গাজীরহাট মন্দির পরিদর্শন করেন দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া হাসান। এসময় তিনি বলেন, পূজায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে ও আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে এবং কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। আর এজন্য পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম সবসময় কাজ করছে।