আজহারুল ইসলাম সাদী, স্টাফ রিপোর্টারঃ
পতিতা ও কল গার্ল নিয়ে যৌন ব্যবসার অন্তরালে সাতক্ষীরার কাটিয়ায় ভাড়া বাসায় "মধু কুঞ্জে" পাওনা টাকা দেওয়ার নাম করে এক সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে কলগার্ল দিয়ে নগ্ন ভিডিও ধারণ ও বিকাশে টাকা আদায়কারী মামলার মূল হোতা একাধিক পর্নোগ্রাফি ও চাঁদাবাজি, প্রতারণা মামলার আসামি কাদের মেম্বরকে আটক করেছে র্যাবের সদস্যরা।
সাতক্ষীরা সদর থানায় দায়ের করা মামলার আসামি মূলহোতা কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের দীর্ঘদিন গ্রেপ্তার এড়াতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ১৬ জুন বিকাল ৪ টার দিকে ঢাকা পালিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে এম, আর পরিবহন কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত কাদের মেম্বার কালিগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দ মধুসূদনপুর গ্রামের এলাহি বক্স গাজীর ছেলে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘদিন অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে খুলনা র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে মূল হোতা কাদের মেম্বরকে আটক করতে পারলেও তার অন্যতম সহযোগী কথিত স্ত্রী মধু কুঞ্জের সর্দারাণী শারমিন আক্তার রিমা সহ অন্য ২ জনকে আটক করতে পারেনি র্যাব সদস্যরা। গত ৫ এপ্রিল সাতক্ষীরা সদর থানায় সাংবাদিক রিপনুজ্জামানের দায়ের করা পর্নোগ্রাফি ও চাঁদাবাজির ৪ নং মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে উপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, তার কথিত স্ত্রী সর্দারাণী শারমিন আক্তার রিমা এবং দেবহাটা থানার পুষ্প কাটি গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে বাবলুর রহমান ও সাতক্ষীরা সদর থানার ফজর আলীকে এখনো গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সাতক্ষীরা শহরে বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে মধুকুঞ্জ গড়ে পতিতা ও কলগার্ল নিয়ে যৌন ব্যবসার অন্তরালে সমাজের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সমাজের নানান শ্রেণী পেশার ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফোনালাপের মাধ্যমে প্রথমে সম্পর্ক গড়ে তুলতো। পরে সুযোগ বুঝে সাতক্ষীরায় ভাড়া বাসা কাদের-রিমার মধু কুঞ্জের ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে ভাড়াটিয়া পতিতা, কলগার্লের সঙ্গে বিকৃত নগ্ন করে বেধড়ক পিটিয়ে ভিডিও ধারণ করে আসছিল।
পরবর্তীতে ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ও পুলিশের দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় ও জোরপূর্বক চেক, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করতো।
রিপনুজ্জামান রিপন নামের এক সাংবাদিকে ব্যবসার পাওনা টাকা দেওয়ার নাম করে গত ১ এপ্রিল তার কাদের- রিমার মধু কুঞ্জে ডেকে নিয়ে বিকাল ৫ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত আটকে রেখে কল গার্ল দিয়ে বিকৃত নগ্ন ভিডিও ধারণ ও বিকাশের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকা আদায়ের ঘটনায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ওই চক্রের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে চক্রটি এখনো পলাতক আছে। ওই চক্রটি এর আগেও ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল হাফিজুর রহমান নামে এক সাংবাদিককে জোর করে ধরে নিয়ে একটি হোটেলে মারপিট ও জামাকাপড় ছিড়ে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় এই কাদের- রিমা চক্রের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় পর্নোগ্রাফি, চাঁদাবাজির মামলায় আটক করে। মামলার আসামিরা হলো কালিগঞ্জ থানার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দ মধুসূদনপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের কন্যা ১ সন্তানের জননী স্বামী পরিত্যক্তা মধু কুঞ্জের সর্দারানি শারমিন আক্তার রিমা এবং তার কথিত স্বামী পরিচয়দানকারী একই গ্রামের এলাহি বক্স গাজীর বিবাহিত ছেলে ১ সন্তানের জনক বহু বিবাহের নায়ক ইউ,পি সদস্য কাদের।